বাল্যবিবাহ ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে এবং শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন সুস্থতা নিশ্চিতকল্পে এবং সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এক কমিউনিটি ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। আজ সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর ময়মনসিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ে এটি আয়োজন করে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের আওতাধীন জেলা তথ্য অফিস ময়মনসিংহ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক শেখ মোঃ শহীদুল ইসলাম। এছাড়াও রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফ বাংলাদেশ ময়মনসিংহের প্রতিনিধি ‘সামাজিক আচরণ পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ’ আমান উল্লাহ।
প্রধান অতিথি বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দিবে। স্কুলের কোমলমতি শিশুরা যদি সহিংসতা, বাল্যবিবাহ বা অন্য কোনো কারণে ঝরে পড়ে, তাতে পরিবার ও রাষ্ট্রের অপূরনীয় ক্ষতি হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের অনার্স-মাস্টার্স পর্যন্ত না হলেও অন্তত উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বিবাহ দিন। তাতে দুইটা লাভ, এক. বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় বাল্যবিবাহ হলো না, দুই. এডমিশন পরবর্তী তার পড়াশোনার সক্ষমতাও দেখা গেলো। তাই বাল্যবিবাহকে না বলি। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ অনুযায়ী এটি দণ্ডনীয় অপরাধ। কোথাও বাল্যবিবাহ সংঘটিত হলে টোল ফ্রি নম্বর ১০৯ বা ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন ৯৯৯ এ কল দিন। নিজে সচেতন হন, অন্যকেও সচেতন করুন।
এ সময় ময়মনসিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সচেতনতামূলক তথ্য ও ভিডিও চিত্র দেখানো হয় এবং এর মূল থিমগুলো রিসোর্স পার্সনসহ অন্যান্যরা ব্যাখ্যা করেন। ভিডিওচিত্রগুলো ছিলো, এক. ছাত্রদের প্রতি শিক্ষকদের আচরণ সম্বলিত, দুই. বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধির ভূমিকা, তিন. বাচ্চাদের খেলাধুলার স্বাধীনতা এবং এসময় কটু কথা বা গালিগালাজ না করা, এবং চার. বাচ্চাদের মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুড়ি উড়ানো।
বাল্যবিবাহের কুফল, শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ এবং টিনেজ (১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী) বয়সী শিশু, কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন নানা শারীরিক ও মানসিক আচরণ পরিবর্তনের ঘটনাবলি ভিডিও চিত্রে তুলে ধরা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয় যে তারা নিজে বাল্যবিবাহ করবে না এবং অন্যকেও করতে দিবে না। প্রতিটি সেশনে প্রায় ৬০জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোজাফফর আহমেদ , সহকারী শিক্ষকবৃন্দ, স্থানীয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং সহকারী তথ্য অফিসার মোঃ রুকুনুজ্জামানসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। একই ক্যাম্পেইন নগরীর মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়েও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।