নেত্রকোনার পূর্বধলায় মন্দিরে নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে নেপাল চন্দ্র ঘোষ (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
শনিবার (১৭ আগস্ট) দিনগত রাতে উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের বাড়হা কালীবাড়ী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে এমনই ঘটনা ঘটে।
আটক নেপাল চন্দ্র ঘোষ মন্দিরের পাশেই বাড়হা ঘোষপাড়া গ্রামের সুধীর চন্দ্র ঘোষের ছেলে। রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জনতার ধাওয়ার সময় নেপালের সঙ্গের লোকজন পালিয়ে যান।
মন্দিরের পাশে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দা কেবল চন্দ্র বর্মন বলেন, শনিবার দিনগত রাত ২টার দিকে তিনি প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হন। এসময় মন্দিরে আঘাতের শব্দ শুনতে পান। পরে পার্শ্ববর্তী আরও কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে মন্দিরের দিকে গেলে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের কয়েকজন দুটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান। এসময় আমাদের ধাওয়ায় মন্দিরের সীমানা প্রাচীর টপকে ভেতর থেকে বের হওয়ার সময় প্রাচীর থেকে পড়ে যান নেপাল চন্দ্র ঘোষ। পরে তাকে আটক করা হয়।
আটক নেপাল চন্দ্র ঘোষ জানান, মন্দিরের দানবাক্স ভেঙে অর্থ লুট ও পরে আগুন দিতে তার বাড়ির পাশের সনাতন ধর্মের কৃষ্ণ ঘোষের ছেলে জয় চন্দ্র ঘোষ এবং পার্শ্ববর্তী দুর্গাপুর উপজেলার আরও ছয়জন মিলে পরিকল্পনা করেন। এজন্য তাদের ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে জয় চন্দ্র ঘোষ তাকে জানান। পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই মিলে দানবাক্স ভাঙার চেষ্টা করতে থাকেন। ভাঙা শেষে আগুন দিতে কিছু খড় ও দিয়াশলাইও প্রস্তুত রাখেন তারা। পরে হাতুড়ির আঘাতের শব্দে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে ছুটে গেলে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক নেপাল চন্দ্র ঘোষকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে ভোরেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই এবং হিন্দু নেতাদের সঙ্গে কথা বলি। আসলে একটি চক্র দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়।
স্থানীয় সুনীল চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘আমরা এখানে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির বন্ধন বজায় রেখে বিভিন্ন পূজা উৎসব করে আসছি। গতকালের ঘটনাটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। একটি চক্র আমাদের সম্প্রীতির বন্ধনকে বিনষ্ট করতে যায়।’
মন্দির কমিটির সভাপতি শ্যামল চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘আমি পূর্বধলা বাজারে অবস্থান করি। ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ছুটে এসেছি। স্থানীয়রা টের না পেলে এখানে হয়তো তারা বড় ধরনের নাশকতা করতেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
জানতে চাইলে পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে।