নির্বাচনের পর সঙ্কট উতরে যায়নি, আরো বেড়েছে : ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার মনে করেছে নির্বাচনের পর সঙ্কট উতরে গেছে। কিন্তু সঙ্কট উতরে যায়নি, আরো বেড়েছে।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, উনারা যদি এখনো সেটা উপলব্ধি না করেন, ভবিষ্যৎ তাদের জন্য খুব ভালো না।
আজ রোববার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের পূর্বে বহু নেতাকর্মীকে একতরফা সাজা দিয়েছে আদালত। এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছে বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাজা দেযা হচ্ছে। ঠিক মতো শুনানি হয়নি, কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিনা শুনানিতে সাজা দিয়েছে সরকার। সাজা দিয়ে কারাগারে রেখে বিরাজ নীতিকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আদালতকে ব্যবহার করছেন ক্ষমতাসীনরা।
তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণ করতে দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মূল উদ্দেশে হচ্ছে, বিরোধী রাজনৈতিক দল যেন না থাকে। মানুষের সর্বশেষ আশা ভরসার স্থল হচ্ছে কোর্ট, কিন্তু সেখানেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।
তিনি জানান, এখনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা কারাগারে আছেন। আরও বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের রাজনীতিকে নির্বাসনে পাঠানো। সেভাবেই রাজনীতি ও নির্বাচন করছে। তারা নির্বাচনের নামে তামাশা করছে। বিচার বিভাগ মানুৃষের শেষ আশা ভরসার স্থল। সেখানেই প্রতিকার পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। অর্থনৈতিক খাত গুলোতে লুটপাট চলছে।
এ সময় ফখরুল দেশে আমদানি করা পণ্য পরীক্ষা নিরিক্ষার করার দাবি জানান। বলেন, তা না হলে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
এই বিএনপি নেতার অভিযোগ, গোটা দেশে এখন নৈরাজ্য চলছে। ঘুস ছাড়া কোনো কথা নেই। দলীয় না হলে চাকরি হয় না, ন্যায় বিচার পায় না। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিকল্পিত ভাবে জিয়াউর রহমানকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করার কাজ চলছে। তাকে এখন খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্ম কিন্তু জিয়াউর রহমানের নাম জানে না। এটা তো ইতিহাস না।
তিনি বলেন, দুর্নীতি আড়াল করতেই বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের মান খারাপ এবং তা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে অনেক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমদানি পণ্যের মান যাচাই করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, এই সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তাদের মধ্যে দাম্ভিকতা তৈরি হয়েছে, কারণ তাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা একটা গোত্র তৈরি করেছে, তাদের দুর্নীতি করতে সহায়তা করছে। সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করে ফেলেছে। এখন গোটা দেশেই নৈরাজ্য।
ফখরুল বলেন, শিক্ষাখাতে দলীয়করণের কারণে মেধাপাচার হচ্ছে। বেগম জিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মা। তার ত্যাগ আনপ্যারালাল। বেগম জিয়া এখন জীবনের জন্য লড়াই করছেন। কে কবে আসলো আমরা সেটা নিয়ে ওরিড না। আমরা জনগণের ওপর আস্থাশীল। ওবায়দুল কাদের মনে করছেন উনারা সংকট ওভারকাম করেছেন। কিন্তু সংকট আরও গভীর হয়েছে।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। সরকার পরিকল্পিতভাবে ব্যর্থ রাষ্ট্র পরিণত করেছে, এটি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি। একটি রাষ্ট্র ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যখন অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে যায়, রাজনৈতিক পরিবেশ নষ্ট হয়। গোটা রাষ্ট্র একটি নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। তাও আবার ক্ষমতাসীন দলের ছাড়া সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সরকারের এমপি-মন্ত্রীরা টাকা পাচার করে, সেটি বিনিয়োগ করেছে বিদেশে, অথচ বাংলাদশের মানুষের অবস্থা খারাপ।
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এটি বললে আওয়ামী লীগের গায়ে জ্বালা ধরে যায়। কিন্তু এটি ট্রু (সত্য)।’