ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ দলের অধিনায়ক আশরাফুল হক আসিফকে সংবর্ধনা দিয়েছে উপজেলা পরিষদ। সংবর্ধনা নিতে এসে বক্তব্য দেওয়ার একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আসিফ। তার কান্না দেখে মা মমতাজ বেগম ও বড় ভাই আরিফুল হকও কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত অনেককে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আসিফ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামের প্রয়াত আবু তালেবের ছেলে। আবু তালেব ছিলেন সাংবাদিক ও ফুটবলার। তার মা মমতাজ বেগম পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর, বড় ভাই আরিফুল হকও ফুটবলার ও সাংবাদিক।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসিফ বলেন, তিন বছর বয়সে আমার বাবা মারা যান। এরপর থেকে সংসারে শুরু হয় টানাপড়েন। সেই সংসারে নিজের সব সাধ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের সব আবদার মেটাতেন মা। অপূর্ণ রাখেননি আমার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নও। বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে সব সময় অনুপ্রেরণা ও আত্মবিশ্বাস জোগাতেন তিনি। সংবর্ধনা নিতে এসে এসব কথা বলার একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন জাতীয় ফুটবল দলের (অনূর্ধ্ব-২০) শিরোপা জয়ী অধিনায়ক আশরাফুল হক আসিফ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহ নূরুল শাহীন, ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ভূঁইয়া মনি প্রমুখ।
এর আগে গত বুধবার আসিফের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল (অনূর্ধ্ব-২০) নেপালকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে। আসিফের অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো শিরোপা অর্জন করায় সারা দেশের মতো ঈশ্বরগঞ্জেও আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের এলাকায় ফেরেন আসিফ। এ খবরে বিভিন্ন সংগঠন আসিফকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে সংবর্ধনা জানায়। এ সময় ফুল হাতে দলের তরুণ ফুটবলাররাও এসে দেখা করেন আসিফের সঙ্গে।