রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫
রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

নিখোঁজের পাঁচ মাস পর মিল্টন সমাদ্দারের কেয়ার থেকে উদ্ধার

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মানসিক ভারসাম্যহীন সেলিম মিয়া (৪৩) কে মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার থেকে পেট কাটা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনদের ধারণা আশ্রয়দাতারা অস্ত্রপচার করে সেলিমের কিডনি নিয়ে গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরিবারের লোকজন শনিবার ময়মনসিংহে বেসরকারি রাজধানী ক্লিনিকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করায়।

রাজধানী ক্লিনিকের ডাঃ শহীদুল্লাহ (রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং) জানান, তার পেটে অস্ত্র পাচারের কোন ক্ষত চিহ্ন নেই। কিডনিও অক্ষত রয়েছে। সেলিম মানসিক ভারসাম্যহীন একজন মানুষ। বেপরোয়া চলা ফেরায় কোন ভাবে পড়ে গিয়ে হয়তো তার পেটে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। তবে পেট কাটা এবং সেলাই করার মত কোন আলামত নেই।

জানা যায়, উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের বৃপাচাশী গ্রামের দিনমজুর হাসিম উদ্দিনের মানসিক ভারসাম্যহীন পুত্র সেলিম গত পাঁচ মাস পূর্বে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। বাবার অভাব-অনটনের সংসারে তাকে খুঁজে পাওয়ার মত আর্থিক কোন সংগতিই তাদের নেই। সম্প্রতি মিল্টন সমাদ্দারের ভয়ংকর প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ এবং কিডনী সহ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরির মতো ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় দেশব্যাপী এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। আর ঠিক সেই মূহুর্তে সেলিমের স্বজনরা ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেলিমের ছবি চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে দেখতে পেয়ে মা-বাবা সহ তার স্বজনরা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। গত ৭ মে সেলিমের মা রাবিয়া, চাচাতো ভাই গ্রাম পুলিশ আঃ রশিদ সেলিমের সন্ধানে ঢাকা চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে গিয়ে তাকে চিনতে পারে। পরে থানা পুলিশের সহায়তায় সেলিমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেলিম একটি নির্জন কুঁড়েঘরে শুয়ে আছে। এসময় দেখা যায় ওই বাড়িতে সেলিমের স্বজন সহ এলাকার অসংখ্য নারী-পুরুষ ভীড় জমিয়েছে সেলিমকে দেখার জন্য।
পরিবারের সাথে কথা হলে সেলিমের মা বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, আমার পুত্রের কিডনী নিয়ে গেছে ওই আশ্রয়দাতারা। সেলিম লোকজনকে দেখে নির্বাক তাকিয়ে থেকে ব্যাথায় চিৎকার শুরু করে। এসময় পরিবার সহ উপস্থিত লোকজন সেলিমের ওপর যারা এ অমানুষিক নিষ্ঠুরতার কাজ করেছে তাদের বিচার দাবি করে।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রম থেকে সেলিম নামের এক ব্যক্তিকে উদ্ধারের ঘটনাটি জানার পর থানা থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তাঁর বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। তবে সেলিমের পরিবার থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগব্যবস্থা নেয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *