আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। পরিবর্তিত বাংলাদেশে শিশুরাই আগামীতে নেতৃত্ব দিবে। এজন্য শিশুদের যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। আর এজন্য এখন একটা শিশুর একমাত্র কাজ হওয়া উচিৎ পড়া, পড়া এবং পড়া। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২৪ উৎযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজিম উদ্দীন।
জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে সহকারী পুলিশ সুপার তাহমিনা আক্তার, সিভিল সার্জনের পরিচালক মোঃ নজরুল ইসলাম এবং শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মেহেদী জামান উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণি, বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণি এবং গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী।
শুরুতে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এর উপস্থিতিতে বেলুন উড্ডয়ন করে শিশু অধিকার সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন করা হয়। এরপর আলোচনায় সভাপতি বলেন, ইউনেস্কোর এক জরীপে দেখা যায় বিশ্বে শিশুরা নানাভাবে বঞ্চিত। ৭৬ শতাংশ শিশু অবহেলিত, ১০ শতাংশ শারীরিক ও মানসিক অবহেলা, ৭ শতাংশ শিশুশ্রম এবং ৫১শতাংশ বাল্যবিবাহের শিকার। এটা অশনিসংকেত।
সিভিল সার্জন প্রতিনিধি বলেন, শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য পরিমিত পুষ্টি সরবরাহ, আয়রন ও ফোলিক এসিড গ্রহণ জরুরি। এছাড়াও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা শিশুদের ৯০শতাংশ রোগবালাই থেকে রক্ষা করে।
শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা বলেন, শিশুরা আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দিবে। বর্তমানে ময়মনসিংহে কোনো শিশুপার্ক নেই। একক পরিবার শিশুদের জন্য হুমকিস্বরূপ। কারণ, মা-বাবার কর্মব্যস্ততায় কাজের বুয়া ও আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে বেড়ে উঠা শিশুদের স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়।
সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, তোমরা শিশুরা এখন সুবর্ণ সময় পার করছো, সময়টা নষ্ট করো না। তোমাদের বয়সটা এমন যে চাইলেই যে কেউ বিপদগামী হয়ে যেতে পারে। এখান থেকে মুক্ত থাকো, মা-বাবার কথামতো চলো, তোমাদের ভবিষ্যৎ সুন্দর হোক।
সমাপনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, দেহ, মন ও আত্মার সমন্বিত ভারসাম্যপূর্ন উন্নতির নামই শিক্ষা। শুধু একাডেমিক বই পড়লেই চলবে না, পাশাপাশি নন-একাডেমিক বই, ভ্রমণ করা, বিতর্ক, গান, কবিতা শিখতে হবে। ভালো বই পড়া, ভালো মানুষের সাথে মেশা, ভালো বন্ধু-বান্ধব, ভালো আত্নীয়-স্বজন তোমার জীবন ও মনকে উন্নতিতে সহায়তা করে। কোনো মানুষ যতক্ষণ না পর্যন্ত তার নফসকে পরিশুদ্ধ করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে ভালো মানুষ হতে পারবে না। এসময় জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড, অভ্যাস ও ভালো দিকগুলোর সংক্ষিপ্ত জরীপ করেন।