দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক, বিশিষ্ট কলামিস্ট ও লেখক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের কবর হয়েছে। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, কিন্তু সেটা যেন চিরদিনের জন্য হয়।
তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা ছাত্র-জনতা সমন্বয়ে লড়াই করেছেন, তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। আপনারা ছোটখাটো কারণে অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না।’
আজ শুক্রবার সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় পুরো টার্মিনাল লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। শিক্ষক,লেখক,বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক,প্রকৌশলী,ছাত্র-জনতাসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার কয়েক হাজার লোক মাহমুদুর রহমানকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমান বন্দরে সমবেত হয়।
এর আগে তিনি আজ সকাল ৯ টা ১৯ মিনিটে বিমানবন্দরে নেমে টার্মিনাল-২ দিয়ে বের হয়ে একটি মিনি ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে দৈনিক আমার দেশ পরিবার সহ অন্যান্য সংগঠনের পক্ষ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার নগর সম্পাদক ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম, আব্দুল্লাহ, আমার দেশের বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী প্রমুখ।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মাহমুদুর রহমান জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আমি আমার মত করে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আপনারা আমাকে আমার মত করে লড়াই করতে দিন। বিগত ১৬ বছর ধরে আমরা এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দল তাদের মত করে লড়াই করেছে। আর আমি আমার দেশ পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে আমার মত করে লড়াই করেছি। আপনাদের সাথে এই বিষয়ে আমি দীর্ঘ আলোচনা করতে পারছিনা। জেল থেকে মুক্ত হবার পরে আরও বড় পরিসরে আপনাদের সাথে দেখা হবে। আপনাদের সাথে সেদিন আমি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ভারতীয় আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা করব।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদসহ সকল শহিদদের স্মরণ করে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের একজন বিপ্লবী আইকন আবু সাঈদ। সাঈদসহ সকল শহিদ আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। আমরা তাদের কখনও ভুলবো না।
তিনি বলেন, পরাজিত ফ্যাসিবাদ বিদেশে বসে, তার বিদেশি প্রভু ও এজেন্টদের নিয়ে বিপ্লবকে নসাৎ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আবার ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে না পারে এদিকে খেয়াল রাখবেন।
বিপ্লবী ছাত্র-জনতার কাছে আহবান রেখে মাহমুদুর রহমান বলেন, ছোটখাটো কারণে অনৈক্য সৃষ্টি করবেন না। এই গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। যার ফলে ছয় বছর নির্বাসনে থাকার পর আমি মাতৃভূমিতে ফিরতে পেরেছি। আমাকে উদ্ভট ও মিথ্যা মামলায় সাত বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। আমার নামে অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে। এমনও হতে পারে আমাকে জেলে যেতে হতে পারে। আপনারা বিচলিত হবেন না। আমি আইনিভাবে সবকিছু মোকাবিলা করবো।
দৈনিক আমার দেশ ২০১৩ সালের এপ্রিলে বন্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মাহমুদুর রহমান পত্রিকাটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। পত্রিকাটি কাগজে প্রকাশে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অনলাইনে প্রকাশ চালু রাখলেও ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট অনলাইন সংস্করণটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২০ সালে মাহমুদুর রহমান লন্ডন থেকে ওয়েবসাইটটি পুনরায় চালু করেন।