বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘আমাদের দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করায় যারা দায়ী, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।’ তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক ব্যবস্থা লঙ্ঘন করার জন্য যারা দায়ী, তাদের আইনের মাধ্যমে বিচার দাবি করছি। তাদের আইনের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।’ আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এগ্রিকালচারিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (অ্যাব)।
পদত্যাগী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দখল-ডাকাতির নির্বাচনে আপনি এককভাবে ফলাফল ঘোষণা করেছেন, আপনি তখন কেন পদত্যাগ করেননি? আপনার কাছে চাকরিটাই বড় ছিল, দেশ-রাষ্ট্রের কথা কি মনে ছিল না? আমাদের দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য যে সব প্রতিষ্ঠান দায়ী, তার মধ্যে অন্যতম নির্বাচন কমিশন।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘পৃথিবী কাঁপানো শিশু-কিশোরদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এক ভয়াবহ দানবের পতন হয়েছে । এ আন্দোলন ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে আসছিল বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও সমমনা জোটগুলো। ৫ আগস্টের একটি পটভূমির মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন হয়েছে।’ স্বৈরাচারের দোসরদের সাথে আঁতাত করা মানে শহীদের রক্তের সাথে সম্পূর্ণভাবে বেইমানি করা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমাদের দল এমন একটি রাজনৈতিক দল, যার সাথে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের গভীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমাদের সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে আমাদের।’ তিনি বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা, যাদের অতীতে আঁতাত করার রেকর্ড আছে, তারা ক্ষমার কথা বলছেন। গণহত্যাকারীদের কিসের ক্ষমা ? গণহত্যাকারীদের ও গণহত্যায় জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ জড়িতদের অবশ্যই বিচার করতে হবে।’ এখনো সকল অফিস-আদালতে শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর লোকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যা জনগণের নজরে এসেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে শুধুমাত্র চারটি পত্রিকা রেখে সব গণমাধ্যম বন্ধ করে আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করেছিল। এবার ভিন্নরূপে বাকশাল কায়েম করে আওয়ামী লীগ। তারা সব পত্রিকা বন্ধ করেনি (তবুও দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, আমার দেশ, দিনকাল বন্ধ করেছে), কিন্তু মালিকানা দিয়েছিল আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠদের, তারা সারাক্ষণ আওয়ামী লীগের প্রচারমাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। গণমাধ্যমের মূল কাজ হলো সত্য উদঘাটন করে বস্তুনিষ্ঠ খবর পরিবেশন করা। এটাই গণতন্ত্র। এর বাইরে গেলে সেটা গণমাধ্যম নয়, প্রচারমাধ্যম বা স্বৈরাচারের ডা-া। প্রকৃত গণতান্ত্রিক দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভূমিকা রাখে গণমাধ্যম। রাষ্ট্রীয় গণতন্ত্রকে বিকাশ করতে হলে একমাত্র উপাদান হচ্ছে স্বাধীন গণমাধ্যম, আবার সেই গণমাধ্যমকে অবশ্যই সত্য বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন প্রমুখ বক্তব্য দেন।