রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত আইনজীবী ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায় অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকরা। আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা অস্ত্রোপচারে দুটি গুলির স্প্লিন্টার বের করা গেলেও গুলি মাথায় রয়ে গেছে। পরে তাঁকে আবারও ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
শুক্রবার রাতে তাঁর শ্যালক তাপস মজুমদার বলেন, ভগ্নিপতি ভুবনকে রাত পৌনে ৯টায় অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে ভুবনের মাথা থেকে দুটি গুলির স্প্লিন্টার বের করা গেছে। তবে এখনও তাঁর মাথায় গুলি রয়ে গেছে। সেটি বের করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই গুলি বের করতে গেলে তাঁর ব্রেনের যে ৪ শতাংশ রেসপন্স ছিল, সেটিও নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এখন আবার তাঁকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।
তাপস মজুমদার বলেন, এদিকে বোন শিক্ষিকা রত্না রানী শীলের অবস্থাও খারাপ হচ্ছে। তাঁকে কোনোভাবেই বুঝ দেওয়া যাচ্ছে না। সার্বক্ষণিক হাসপাতালের সিসিইউর সামনে অবস্থান করছেন আর কান্নাকাটি করছেন। স্বামীর চিন্তায় তিনি খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। ভুবনের কিছু হলে বোনকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, অ্যাডভোকেট ভুবন চার দিন ধরে পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় প্রচুর টাকা খরচ হচ্ছে। প্রথম দু’দিনে বিল এসেছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ভর্তিসহ প্রাথমিক চিকিৎসায় খরচ হয়েছে ৯৩ হাজার টাকা। দ্বিতীয় দিন বিল এসেছে ৬৭ হাজার টাকা। হাসপাতালে পরিশোধ করা হয়েছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যেই তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচারের জন্য ২ লাখ টাকার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা। এত টাকা আমরা কোথায় পাব, ভেবে কূল পাচ্ছি না।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেডের অফিস থেকে ফকিরাপুল আরামবাগের মেসে ফেরার পথে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের বিজি প্রেস এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হন আইনজীবী ভুবন। এতে আহত অপর দু’জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও লাইফ সাপোর্টে আছেন ভুবন।
এদিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ভুবনের স্ত্রী রত্না রানী শীলের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় সাত-আটজনকে আসামি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।