একের পর এক তরুপের তাস ছেড়েই যাচ্ছেন বাংলাদেশের জয়া আহসান, আজমেরী হক বাঁধন ও রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা। ছবিপ্রাপ্তির লড়াইয়ে এতেই কলকাতার নায়িকাদের ঘুম গেছে উবে।
নিজেদের চেনা মাঠে যেন শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী এপার বাংলার এই তিন ললনা। আর তাতেই ওপারে নায়িকাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ।
টলিউডের ‘পয়লা নম্বর দখলের লড়াইয়ে’ পিছিয়ে পরা অনেক নায়িকার কণ্ঠে অস্ফুট শব্দবন্ধ, ‘এমন অনেক চরিত্রই বাংলাদেশি অভিনেত্রীদের দেওয়া হয়, যেটা এখানকার যে কেউ করতে পারতেন!’
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় এভাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নায়িকার বয়ান উঠে এসেছে।
হবেই বা না কেন? জয়া আহসান প্রথম বাংলাদেশি অভিনেত্রী, যিনি টলিউডে পরপর কাজ করছেন অনেক বছর ধরেই। ‘আবর্ত’ দিয়ে হয়েছিল শুরু। তারপর ‘রাজকাহিনী’, ‘বিসর্জন’, ‘বিজয়া’, ‘কণ্ঠ’, ‘বিনিসুতোয়’…। জয়ার গোটা তিনেক ছবি এখনও মুক্তির অপেক্ষায়। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’তে আজমেরী হক বাঁধনের কাজ প্রশংসিত। তাকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন সেখানকার অনেক পরিচালকই। রাজর্ষি দে পরিচালিত ‘মায়া’, রিঙ্গোর ছবি ‘আ রিভার ইন হেভেন’-এ আছেন অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা।
তাই ঘুরেফিরে প্রশ্নটা এসেছে- বাংলাদেশি নায়িকারা পরপর কাজ করছেন টলিউডে; কতটা চাপ বাড়লো নুসরাত-মিমিদের?
অনেকেই বলেছেন— ‘প্রতিযোগিতায় বিশ্বাসী নই’, ‘নিজের কাজেই ফোকাস করি’। অথচ সবাই জানেন, প্রতিযোগিতা একটা আছে। এটা এমন একটা দুষ্টচক্র, যার থেকে নিস্তার নেই! আবার মুখ ফুটে বললে, পরাজয় বরণ করে নেওয়ার শঙ্কা!
জানা যায়, বাংলাদেশি এই তিন তারকা যে ঘরানার সিনেমাতে কাজ করছেন, তাতে এর আগে সাধারণত পাওলি দাম, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, রাইমা সেনদের দেখা যেত। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির চাহিদা কমে যাওয়ায় শুভশ্রী, শ্রাবন্তী, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহানেরাও অন্য ধারার দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে কলকাতায় অল্প পরিসরে প্রতিযোগিতা বেশি।
জয়া অবশ্য এই প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবতে রাজি নন। তার মতে, কাজের সুযোগ সবারই আছে।
আর টলিউড নায়িকাদের কপালে ভাঁজ ফেলে দেওয়া নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী মিথিলা শিল্পের আদানপ্রদানের ওপরে জোর দিলেন। বললেন, ‘কেউ কারও কাজ, জায়গা কেড়ে নিতে পারেন বলে মনে হয় না। সকলেই নিজের যোগ্যতা দিয়ে কাজ পাচ্ছেন। আমি বৈবাহিক সূত্রে কলকাতায় থাকছি, তাই এখানেই কাজ করছি এখন। তবে আমি এখানে সদ্য কাজ শুরু করেছি। আমাকে বোধহয় কারও প্রতিযোগী হিসেবে দেখাটা ঠিক হবে না।’
তবে বাংলাদেশে এসে কাজ করার শিল্পীর তালিকায় অনেকেই আছেন। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় অনেক আগেই এপারে এসেছেন।
বাংলাদেশের প্রজেক্ট ‘কমান্ডো’তে কাজ করেছেন দেব। আবার ওপারে গিয়ে একাধিক নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন নুসরাত ফারিয়া। কাজ করেছেন আরিফিন শুভও।
বাংলাদেশে এসে কাজ করেছেন এমন এক নায়িকা কলকাতার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এখানে বাংলাদেশের শিল্পীরা যত সুযোগ পান, সেই তুলনায় ওপার বাংলায় আমাদের কাজের সুযোগ বেশ কম।’