সংবাদ শিরোনাম

 

সারাদেশের সঙ্গে টাঙ্গাই‌লে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হ‌লেও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা‌নের শিক্ষার্থীরা ক‌লে‌জে আস‌তে পা‌রে‌নি। কারণ, বন্যার পা‌নি প্রবেশ করায় দু‌টি ক‌লে‌জের শ্রেণিকক্ষসহ মাঠ ত‌লি‌য়ে গেছে। দীর্ঘদিন পর প্রিয় প্রতিষ্ঠা‌নে যে‌তে না পে‌রে হতাশ শিক্ষার্থীরা। আর সন্তানদের হতাশায় অ‌ভিভাবকরাও চিন্তিত।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটি হলো জেলার মির্জাপুর পৌরসভায় অব‌স্থিত মির্জাপুর ম‌হিলা ডিগ্রি ক‌লে‌জে ও আলহাজ শফিউদ্দিন মিঞা অ্যান্ড একাব্বর হোসেন টেকনিক্যাল কলেজ। এ ছাড়া মির্জাপুর ও বাসাইল উপ‌জেলার বেশ কিছু বিদ্যালয়ে পা‌নি ওঠায় বিকল্প হি‌সে‌বে উঁচু জায়গায় ও অ‌ন্যের বা‌ড়িগু‌লো‌তে ক্লাস কার্যক্রম চা‌লি‌য়ে যা‌চ্ছেন শিক্ষকরা।

স‌রেজ‌মি‌নে মির্জাপুর উপ‌জেলার মির্জাপুর ম‌হিলা ডিগ্রি ক‌লে‌জে দেখা যায়, বন্যার পা‌নি‌তে বেশ কিছু‌দিন ধ‌রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান‌টি ত‌লি‌য়ে র‌য়ে‌ছে। এ ছাড়া উপ‌জেলার বি‌ভিন্ন সরকা‌রি প্রাথ‌মিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ১০৮‌টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা‌নে বন্যার পা‌নি প্রবেশ ক‌রে‌ছে। এর ম‌ধ্যে ৬‌টি সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ্যাল‌য় ও শ্রেণিক‌ক্ষে পা‌নি থাকায় বিকল্প হি‌সে‌বে অ‌ন্যের বা‌ড়ি ও উঁচু স্থা‌নে ক্লাস নি‌চ্ছেন শিক্ষকরা।

এ‌দি‌কে বাসাইল উপ‌জেলায় তিন‌টি সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ্যাল‌য়ে পা‌নি উ‌ঠে‌ছে। এর ম‌ধ্যে রাশড়া সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ্যাল‌য়ের শিক্ষার্থী‌দের অ‌ন্যের বা‌ড়ি‌তে খোলা আকা‌শের নি‌চে ক্লাস কর‌ছে। এ ছাড়া মাইজসারা ও ম‌টেশ্বরা সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ্যাল‌য়ের দ্বিতল ভব‌নের নিচতলায় পা‌নি র‌য়ে‌ছে। ত‌বে দ্বিতীয়তলায় ক্লাস কার্যক্রম হ‌চ্ছে।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগু‌লো‌য় বন্যার পা‌নি প্রবেশ করায় এবং বিকল্প স্থা‌নে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করায় সাধারণ দি‌নের মতো শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আস‌ছে না। আবার দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিশু শিক্ষার্থীরা বাল্যবি‌বাহের শিকার হ‌চ্ছে। ফ‌লে বিদ্যালয়গু‌লো‌য় শিক্ষার্থীর উপ‌স্থি‌তি কম। ত‌বে শিক্ষকরা বলছেন, তারা শিক্ষার্থী‌দের বিদ্যাল‌য়ে আনার চেষ্টা কর‌ছেন।

দুঃখ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলছে, অন্যান্য স্কুল-ক‌লে‌জের শিক্ষার্থী‌দের ফুল দি‌য়ে বরণ ক‌রে নেওয়া হ‌য়ে‌ছে। শিক্ষার্থীরা আনন্দ নি‌য়ে পড়াশোনা কর‌তে গেছে। কিন্তু মির্জাপুর ম‌হিলা ডিগ্রি ক‌লে‌জে পা‌নি থাকায় ক্লাস কার্যক্রম হ‌চ্ছে না। দীর্ঘদিন পরও আমরা ক্লাস কর‌তে পার‌ছি না।

বাসাই‌লের বি‌ভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা‌নের শিক্ষার্থীরা জানায়, ‌বিদ্যাল‌য়ে নৌকায় করে যে‌তে হয়। আবার হেঁটে পা‌নি মাড়ি‌য়ে যে‌তে হ‌চ্ছে। এ‌তে চরম দুর্ভোগ পোহা‌তে হ‌চ্ছে।

মির্জাপুর ম‌হিলা ডিগ্রি ক‌লে‌জের অধ্যক্ষ হারুন অর র‌শিদ ব‌লেন, পু‌রো ক‌লেজজু‌ড়ে পা‌নি থইথই কর‌ছে। এ‌তে ক‌লে‌জে ক্লাস কার্যক্রম চালানো সম্ভব হ‌চ্ছে না। ত‌বে ক‌লে‌জের পা‌শে রাস্তার ওপর শিক্ষার্থী‌দের কাছ থে‌কে অ্যাসাইন‌মেন্ট জমা নেওয়া হ‌চ্ছে। পা‌নি ক‌মে গে‌লে আগামী সপ্তা‌হে ক্লাস কার্যক্রম শুরু কর‌তে পারব।

বাসাইল উপ‌জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সদানন্দ পাল বলেন, তিন‌টি সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ্যাল‌য়ে বন্যার পা‌নি উ‌ঠে‌ছে। এতে বিকল্প হি‌সে‌বে অ‌ন্যের বা‌ড়ি‌র উঠা‌নে ক্লাস করা‌নো হ‌চ্ছে। বা‌কি দুইটি বিদ্যাল‌য়ের দ্বিতীয় তলায় ক্লাস নেওয়া হ‌চ্ছে।

মির্জাপুর উপ‌জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হো‌সেন ব‌লেন, উপ‌জেলার ৮৬‌টি বিদ্যাল‌য়ে বন্যার পা‌নি প্রবেশ ক‌রে‌ছে। এর ম‌ধ্যে ৬‌টি বিদ্যাল‌য়ে ক্লাস করানো সম্ভব হ‌চ্ছে না। ত‌বে বিকল্প হি‌সে‌বে অ‌ন্যের বা‌ড়ি ও উঁচু স্থা‌নে ক্লাস করা‌নো হ‌চ্ছে। এ ছাড়া সব বিদ্যাল‌য়ে ক্লাস কার্যক্রম চালু র‌য়ে‌ছে। বন্যাকব‌লিত বিদ্যাল‌য়ের শিক্ষার্থীরা নৌকা ও বন্যার পা‌নি‌তে হেঁটে বিদ্যাল‌য়ে আস‌ছে।

মির্জাপুর উপ‌জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর র‌শিদ ব‌লেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হ‌লেও উপ‌জেলার দুটি ক‌লে‌জে ক্লাস কার্যক্রম হ‌চ্ছে না। বন্যার পা‌নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা‌নে প্রবেশ ক‌রে নিম‌জ্জিত হ‌ওয়ায় এমন প‌রি‌স্থি‌তির সৃ‌ষ্টি হ‌য়ে‌ছে।


মতামত জানান :

 
 
 
কপিরাইট © ময়মনসিংহ প্রতিদিন ডটকম - সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | উন্নয়নে হোস্টপিও.কম