জিয়াউর রহমান উৎপাদনের রাজনীতি করে সবাইকে উন্নত করতে চেয়েছেন : নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জিয়াউর রহমানের জীবন আলেখ্যের বিপুল ক্যানভাস অল্প সময়ে উন্মোচন করা সম্ভব নয়। তিনি বিশাল ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তিনি পাকিস্তান বাহিনীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে সেই অস্ত্র পাকিস্তানিদের প্রতি অস্ত্র তাঁক করে বলেছিলেন ‘ইউ রিভল্ড’ বিদ্রোহ করলাম। আর একটা মানুষ দেখান যিনি জিয়াউর রহমানের আগে সাহস করে এই কাজটা করতে পেরেছেন। আমি তাঁকেই নেতা মানবো। তিনি দেশের প্রথম সেক্টর কমান্ডার, জিয়া প্রথম ফোর্সেস কমান্ডার।
জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্ত এলাকায় বাংলাদেশের স্বাধীন প্রশাসন গড়ে উঠেছিল। ৭৫ সালে না খেয়ে মানুষ মারা গেছে। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষের মধ্যে খাদ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, খাল কেটে সার বিতরণ করে দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন। রাষ্ট্রের অর্থনীতির উন্নয়নে কৃষি, তৈরি পোষাক শিল্প এবং প্রবাসীর আয়ের মতো তিনটি স্তম্ভ তৈরি করে গেছেন। জিয়া কোনোদিন মুজিবুর রহমানকে হেয় করে সমালোচনা করেননি। বেগম জিয়াও করেননি। তিনি বলেন, এদেশের দুঃখী কৃষক যারা দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পারছিল না, তাঁদেরকে তিনি নতুন করে বাঁচার আশা দেখিয়েছিলেন। এক ফসলী জমিকে তিন ফসলী করতে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। ঘরে ঘরে হাঁস, মুরগী, গবাদিপশু পালনে উৎসাহিত করেছিলেন। এ কারণেই জিয়ার মৃত্যুর খবর শোনে মানুষ কেঁদেছেন। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে কৃষি ভিত্তিক ও কুঠির শিল্প গড়তে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাঁদের উৎপাদিত চিংড়িসহ পণ্য সামগ্রী রপ্তানি করেছেন। কৃষি নির্ভর দেশকে শিল্পোন্নোয়ন করে সমৃদ্ধ করেছেন। গ্রামের মহিলাদের স্বাবলম্বী করতে তিনি ঢেঁকি ঋণ চালু করেছিলেন। জিয়াউর রহমান উৎপাদনের রাজনীতি করে সকলের উন্নয়ন চেয়েছেন সবাইকে উন্নত করতে চেয়েছেন।
সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হল অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে বিভাগীয় বিএনপি আয়োজিত কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে এবং শিল্প বিকাশে শহীদ জিয়ার অবদান শীর্ষক আলোচনা সভা বক্তারা এসব কথা বলেন। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের সভাপতিত্বে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন জি- নাইন এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সায়ন্ত সাখাওয়াত হোসেন, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন ও শরিফুল আলম। অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডির লিখিত ধারনা পত্র পাঠ করেন বাকৃবি সোনালী দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জি-নাইন এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সায়ন্ত সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, জিয়াউর রহমান ৪৫ বছর বেঁচে ছিলেন। এত অল্প সময়ে তিনি ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক, রাষ্ট্রপতি, সেনা প্রধান এবং বিএনপির মতো জনপ্রিয় দলের প্রতিষ্ঠাতা। জিয়ার মতো এমন বর্ণাঢ্য জীবনের আর একটি মানুষ নেই। একুশে ও স্বাধীনতা পদক শহীদ জিয়াউর রহমানই প্রবর্তন করেছেন। সেই পদক তিনি দলীয় বিবেচনায় দেননি। কবি শামসুর রাহমান, সুফিয়া কামালসহ গুণীদের দলমত নির্বিশেষে যোগ্য মূল্যায়ন করছেন। আর এখন দলীয় লোকদের এই পদক দিয়ে বিএনপি, জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানকে গালাগাল করানো হয়। তিনি বলেন, খাল খনন কর্মসূচি শুধু সেচ নয় পরিবেশ বান্ধব বহুমাত্রিক উন্নয়নের সামাজিক বন্ধন হিসেবে কাজ করেছে। এদেশের যা কিছু ভালো হয়েছে, তা বিএনপির জন্যই হয়েছে। সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের জেলা আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, জিয়াউর রহমানই প্রথম কৃষিবিদ ও চিকিৎসকদের মর্যাদা দিয়ে দিয়েছিলেন। সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্র ব্যবহার করে শহীদ জিয়ার অবদান মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের মানুষ খেতে পায় না। আজিজ-বেনজীরসহ লুটেরাদের বিচার করা হয় না।
ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এনায়েতউল্লাহ কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. আনোয়ারুল হক, সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালি, শেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মাহমুদুল হক রুবেল, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হযরত আলী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শাহ নুরুল কবির শাহীন, অ্যাডভোকেট আরিফ আজিজ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সভায় কৃষিবিদ, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ ময়মনসিংহ বিভাগের বিএনপির সাবেক এমপি এবং বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যোগদান করেন।