ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডবে আম চাষিদের মাথায় হাত
উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গত ১০ বছর ধরে আমের চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে। আম চাষে লাভবান হওয়ায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে আম বাগানের পরিমাণ। তবে এ বছর আম বাজারজাত করার আগ মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ঝড়ে গেছে উপজেলার বেশিরভাগ বাগানের আম। এমনকি আম গাছেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে হতাশ উপকূলের কয়েক শ আম চাষি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি সহযোগিতার দাবি তাদের।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডব শেষ হলে উপজেলার বেশ কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ বাগানের অবস্থা খুবই নাজুক। অনেক বাগানের আমগাছ ভেঙে মাটিতে পড়ে গেছে। আবার অনেক বাগানের অপরিপক্ব আম মাটিতে পরে স্তূপ হয়ে আছে। কেউ কেউ আবার আধা পাকা ও কাঁচা আম কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এরকম নানা হতাশা নিয়েই দুশ্চিন্তায় মাথায় হাত আম চাষিদের।
উপজেলা কুয়াকাটা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের আম চাষি মো. ইদ্রিস গাজি বলেন, আমি গত ১০ বছর ধরে আম চাষ করে ভালো লাভবান হই। কিন্তু এ বছর ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে পুরো বাগানটি শেষ হয়ে গেছে। আশা ছিল, এ বছর বাগান থেকে ১০ লাখ টাকার আম বিক্রি করব। বর্তমানে বাগানে যে আম আছে তা হয়ত ১ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব।
উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের চাষি মো. জাহাঙ্গীর মুসুল্লি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে চেষ্টা করছি একটি বড় আম বাগান করার। বর্তমানে আমার ছয় একর জমিতে রুপালি, বারিফোর, কিউজাই, গৌরমতি, ব্যানানা, ফজলি, আশ্বিনা, গোপালভোগসহ প্রায় ৩৫ প্রজাতির ৭০০ আমের গাছ রয়েছে। তবে এবার ঘূর্ণিঝড় রেমাল সব হিসেব উল্টে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ১০০ মণের বেশি আম নষ্ট হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসেন জানান, রেমালের তাণ্ডবে উপজেলায় ১৮০ হেক্টর আবাদি জমির শাক সবজি, ৫৮ হেক্টর জমির পাট, ২৫ হেক্টর জমির পেঁপে, ৫০ হেক্টর জমির কলা, ১০ হেক্টর জমির তিল, ১৫০ হেক্টর জমির আম, ১০৬ হেক্টর জমির আউশ বীজতলা, ১৭৮ হেক্টর জমির আউশ আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কৃষি খাতে মোট ক্ষতির পরিমাণ ৮ কোটি টাকা। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। যাতে প্রতিটি কৃষক আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে।