আশ্বিনের টানা বর্ষণে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে আমন ধানের ১৭৫০ হেক্টর জমির পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়াও পানিতে ডুবেছে সবজির ৮০ হেক্টর জমি।
মঙ্গলবার উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার টানা বর্ষণে উপজেলা ও পৌর শহরের রোপা আমন ধান এবং সবজি খেত পানিতে ডুবে যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় আমন মৌসুমে ২০৭২০ হেক্টর জমি লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
জুলাই মাস থেকে কৃষকরা জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ শুরু করে। কৃষি অফিসের পরামর্শ ও কৃষকের সঠিক পরিচর্যায় আমন ধান চারা দ্রুত বেড়ে উঠতে শুরু করে। আগামী এক মাসের মধ্যেই ধান জমি থেকে কাটার উপযোগী হবে। এরমধ্যেই গত বৃহস্পতিবার টানা বর্ষণে নিম্নাঞ্চলের আমন ধানের জমি পানিতে ডুবে যায়।
উপজেলার রামগোপালপুর, মাওহা, বোকাইনগর, সহনাটি, অচিন্তপুর ডৌহাখলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে আমন ধান ও সবজির জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে।
উপজেলার কড়মড়িয়া গ্রামের কৃষক শেখ সাদী বলেন, এত পানি ৮৮ সালের বন্যাতেও দেখিনি। অতিবৃষ্টিপাতের কারণে পানিতে তোড়ে আমার বাড়ির পারিবারিক পুষ্টিবাগান, আলু, মিষ্টি আলু, হলুদ সহ অন্যান্য সবজির জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন লাখ টাকা।
উপজেলার নয়ানগর গ্রামের কৃষক আজহারুল করিম বলেন, টানা বর্ষণে আমাদের গ্রামের অধিকাংশ আমন ধানের জমি পানিতে ডুবে গেছে। আমার ২৭ কাঠা আমন ধানের জমি পানিতে ডুবে আছে। ধান গাছ সব পচে যাচ্ছে। পানি কমলেও এই জমি থেকে আর ধান পাবো না।
নয়ানগর আরেক কৃষক মিস্টার মিয়া বলেন, লাভের আশায় চার কাঠা জমিতে বেগুন চাষ করেছিলা। পানিতে বেগুনের খেত তলিয়ে গেছে।
উপজেলার চারআানিপাড়া গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বলেন, টানা বর্ষণে ৫০কাঠা জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা কৃষক মানুষ এই ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে উঠবো বুঝতে পারছি না। আর পরিবারকেই বা এখন কি খাওয়াবো।
উপজেলা ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি কমরেড হারুন আল বারী বলেন, গত ৫২ বছরের মধ্যে বৃষ্টিপাতে এ অঞ্চলে এতো পানি হয়নি। কৃষকের ধান ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। হ্যাচারি মালিক ও মাছ চাষিদের মাছ ভেসে গিয়ে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ভাবে সহযোগিতার দাবি জানিচ্ছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নিলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, টানা বর্ষণে উপজেলার ১৮৩০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে রোপা আমন ১৭৫০ হেক্টর ও সবজি ৮০ হেক্টর। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এই তথ্য পাঠানো হয়েছে। বিশেষ প্রণোদনা আসলে দেয়া হবে।