আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ব্যবহার না করার নির্দেশনা চেয়ে দায়েরকৃত রিট পিটিশন সরাসরি খারিজ করে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ পর্যবেক্ষণসহ রিটটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেয়। এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বাসসকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের দুইজন আইনজীবী এই রিট পিটিশন দায়ের করেছিলেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় জন সমন্বয়ককে নিরাপত্তার স্বার্থে ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছিল এবং তাদের ছেড়েও দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আদালতে বলেছি রিট পিটিশন দায়ের বিষয়ে রুলস দেয়া আছে এবং রিট কিভাবে দায়ের করা হবে সেটিও উল্লেখ রয়েছে। এই রিট পিটিশনটি সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেয় উচ্চ আদালত। আদেশে হাইকোর্ট কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, আইন ও সংবিধান অনুযায়ী সভা সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে করার অধিকার রয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে সভা সমাবেশ করতে পারবে। যদি কোন সভা সমাবেশ থেকে সহিংসতা উশৃঙ্খলতা অরাজকতা হয় সে ক্ষেত্রে পুলিশ ফৌজদারী কার্যবিধি ও পুলিশ প্রবিধানমালা বেঙ্গলের (পিআরবি) সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসরণ করে পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
এটর্নি জেনারেল বলেন, রিটটি দায়ের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কেননা খুলনায় পুলিশ হত্যা, ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশকে পিটিয়ে মেরে লাশ ঝুলিয়ে রাখা, উত্তরায় একজনকে পিটিয়ে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এসব ঘটনা তারা রিটে উল্লেখ করেননি। তাই, রিটটি একচোখা। গতকাল ইংল্যান্ডেও নানা জায়গায় আগুন দেয়া হয়েছে, সেখানকার প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে আইন অনুযায়ী কাজ করতে বলেছেন এ বিষয়টি আমি আজ আদালতে বলেছি।
রিট পিটিশনের পক্ষে আইনজীবী অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, পর্যবেক্ষণ দিয়ে রিটটি খারিজ করে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশে সভা সমাবেশ করা সংবিধানিক অধিকার। সমাবেশে বিষয়ে দায়িত্ব পালনে রুল অনুসরণ করবে পুলিশ। আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারবে না পুলিশ।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, এডভোকেট জেড আই খান পান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, এডভোকেট মানজুর আল মতিন প্রীতম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ ও অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন প্রীতম ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি এ রিট দায়ের করেন। আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ব্যবহার না করার নির্দেশনা এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে পর্যবেক্ষণসহ রিটটি সরাসরি খারিজ করে আজ আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।