আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ হাজারের বেশি মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা প্রায় সোয়া সাত লাখে পৌঁছে গেছে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখল যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুতেও শীর্ষ স্থানে রয়েছে দেশটি। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় শনাক্তের সংখ্যা ২১ কোটি ৪৬ লাখের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। অন্য দিকে মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ হাজার ১৫২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় প্রাণহানি বেড়েছে প্রায় সাড়ে সাতশ। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার ৩৯৯ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া একই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন সাত লাখ ১৬ হাজার ২৭৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ল প্রায় ৬৫ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও বেড়ে ২১ কোটি ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ৯৮৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ দিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুতেও শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৭১ হাজার ৭১৯ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ২৮৭ জন। মহামারি করোনার থাবায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৯১ লাখ ৫৭ হাজার ২৩১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া প্রাণ হারিয়েছেন ছয় লাখ ৪৯ হাজার ৬৮০ জন।
অপর দিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া রয়েছে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। একই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় শনাক্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৪১ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ৬৭১ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও ৪০ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৭ জন ছাড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ২৯ হাজার ২৯৩ জন লোকের।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনার ভয়াল থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন ৯০১ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫২৯ জন। অন্য দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ছয় লাখ ৪৫ হাজার ৫৩৭ জন ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার ৭৩০ জন কোভিড-১৯ শনাক্ত রোগীর।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখনো তৃতীয়। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে প্রাণঘাতী ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬০৮ জন। এছাড়া নতুন করে করোনায় শনাক্ত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৩৯৭ জন। দেশটিতে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা তিন কোটি ২৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭৬৭ জন ছাড়িয়েছে। আর মারা গেছেন চার লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৬ জন করোনা রোগী।
এ দিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৮৩ জন। এছাড়া করোনায় শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৬৫ জন। মহামারি করোনার শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৭৭ জন ছাড়িয়ে গেছে। আর মৃত্যু হয়েছে এক লাখ চার হাজার ২২ জনের।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৬ জন ফ্রান্সে, আর রাশিয়ায় ৬৮ লাখ চার হাজার ৯১০ জন, এছাড়া যুক্তরাজ্যে ৬৫ লাখ ৯০ হাজার ৭৪৭ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে ৪৫ লাখ দুই হাজার ৩৯৬ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৬২ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮১ জন, জার্মানিতে ৩৯ লাখ এক হাজার ৮৬৪ জন, স্পেনে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার ২০৫ জন এবং ৩২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৭৮ জন মেক্সিকোতে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।
অপর দিকে করোনার ভয়াল থাবায় এখন পর্যন্ত এক লাখ ১৩ হাজার ৬৬৫ জন ফ্রান্সে, আর রাশিয়ায় এক লাখ ৭৮ হাজার ৪২৩ জন, এছাড়া যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩২ হাজার তিনজন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ৯১৪ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৫৫ হাজার ২১২ জন, জার্মানিতে ৯২ হাজার ৫৭২ জন, স্পেনে ৮৩ হাজার ৬৯০ জন এবং দুই লাখ ৫৪ হাজার ৪৬৬ জন মেক্সিকোতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করেছিল।