কক্সবাজারে বৃষ্টি কিছুটা কমায় শহরের জলাবদ্ধ এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। তবে নিম্নাঞ্চলে এখনও পানিবন্দি অবস্থায় আছেন জেলার ছয়টি উপজেলার অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বৃষ্টি কম হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ফলে শহর ছাড়াও উপজেলার সড়ক-উপসড়কে ক্ষত চিহ্ন ভেসে উঠেছে। সকালে শহরের সমিতিপাড়া সমুদ্রপয়েন্ট থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশটি জোয়ারের পানির সঙ্গে ভেসে আসে। এ নিয়ে গত তিন দিনে পাহাড়ধস ও ট্রলারডুবিতে রোহিঙ্গাসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছয় জন স্থানীয় বাসিন্দা।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান বলেন, ‘শুক্রবারের তুলনায় শনিবার বৃষ্টি কিছুটা কমেছে। তবে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত আছে। শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত আছে। উপকূলীয় এলাকা, বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সমুদ্রবন্দরকে এখনও ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।’
এদিকে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় শহরের জলাবদ্ধ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নত হয়েছে। পানি নেমে গেছে পর্যটন জোন কলাতলীর হোটেল মোটেল এলাকার সব সড়ক, সৈকত সংলগ্ন এলাকা, মাকের্ট এলাকা থেকে। এতে দুর্ভোগে পড়েছিলেন অন্তত ২০ হাজার পর্যটক। ইতোমধ্যে দুর্ভোগ কেটে গেছে তাদের। এ ছাড়া সদর, রামু, উখিয়া, চকরিয়াসহ বিভিন্ন উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। এখনও পানিবন্দি অবস্থায় দুর্ভোগে আছেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ।
উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমার ইউনিয়ন। তিন দিন ধরে বৃষ্টির কারণে এই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। শনিবার থেকে পানি কমেছে। তবে মানুষের দুর্ভোগ কিছুটা বেড়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি। সম্পূর্ণ পানি নেমে গেলে নিরূপণ করা যাবে। তবে উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে ৩০০ পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। পানি কমে যাওয়ায় শনিবার সকালে তারা বাড়ি ফিরেছেন। এবার ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্তদের ৪৫ মেট্রিক টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার পর ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারিভাবে আরও অনুদান দেওয়া হবে।’