আরও ২ দিন দাবদাহের পূর্বাভাস
বৃহস্পতিবার একপশলা বৃষ্টিতে স্বস্তি নেমেছিল। কমেছিল তাপমাত্রা। ফলে দাবদাহের কবল থেকে মুক্তির আভাস মিলেছিল। কিন্তু এখনই মিলছে না রক্ষা। আরও দু-দিন থাকতে পারে দাবদাহ। এমনই পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় তাপপ্রবাহ ফিরে এসেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ শনিবারও তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। রবিবার তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে। পরদিন সোমবার অবশ্য তাপমাত্রা অনেকটা কমে যেতে পারে। তবে মে মাসে বিপদ ছাড়ছে না, ঝড়-বৃষ্টি-বন্যার পাশাপাশি থাকবে তাপপ্রবাহ। চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হতে পারে। সেটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রাজধানীতে গত বৃহস্পতিবার ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এর আগে রাজধানীতে সর্বশেষ বৃষ্টি হয়েছিল ১৭ এপ্রিল, তা-ও মাত্র এক মিলিমিটার। এদিন দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় রাঙামাটিতে, ৬৭ মিলিমিটার।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবারও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা একই রকম ছিল, তবে তা ছিল চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল রাজধানীর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন যা ছিল ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মে মাসের তাপমাত্রা এপ্রিল মাসের চেয়ে কিছুটা কম থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা একটু বেশি থাকতে পারে। তবে এপ্রিলের মতো দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ থাকবে না।
মে মাসে তিন থেকে পাঁচ দিন হালকা ধরনের কালবৈশাখি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আর দুই থেকে তিন দিন বজ্র-শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি ও তীব্র কালবৈশাখি হতে পারে। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এ ছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চল বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের (সিলেটসহ হাওর অঞ্চলে) নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে। কিছু কিছু জায়গায় তা বিপৎসীমাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের হার ২৭৭ দশমিক ৩ মিলিমিটার। তবে গত মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮১ ভাগ কম বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় বৃষ্টি কম হয়েছে ৯১ শতাংশ। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এপ্রিলে কোনো বৃষ্টিই হয়নি।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে ১৫ মে। ঘূর্ণিঝড় যদি বাস্তবে সৃষ্টি হয়, তবে সেটির নাম হবে রিমাল। এই নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দেওয়া।
মার্কিন আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, মার্চে ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম শুরু হলেও ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড়, নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপ সৃষ্টি হয়নি। তাই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে।